ঢাকা ০৫:২৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাকুন্দিয়ায় বেড়েছে জ্বর-সর্দি ও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:০০:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ নভেম্বর ২০২০
  • ১৬৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গত দুই-তিন দিন ধরে জ্বর-সর্দিতে ভুগছে আড়াই বছর বয়সী শাহ পরান। তাই তাকে চিকিৎসক দেখিয়ে ওষুধ নিতে এসেছেন মা দেলোয়ারা বেগম। একই অবস্থা রাব্বি নামের সাত বছরের এক শিশুর। সেও মায়ের সাথে এসেছে চিকিৎসার জন্য।

শাহ পরান, রাব্বির মতো অসংখ্য শিশু-নারী-পুরুষ জ্বর-সর্দিতে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসেছেন চিকিৎসার জন্য।

রোববার (২২ নভেম্বর) সকাল সোয়া ১০টার দিকে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, টিকিট কাউন্টারে শিশু-নারী-পুরুষের লম্বা লাইন। এর মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি। লম্বা লাইন দেখা গেছে চিকিৎসকর ও ওষুধ বিতরণের কক্ষের সামনেও।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গড়ে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ রোগী আসলেও গত এক সপ্তাহ ধরে বেড়েছে রোগীর সংখ্যা। গত এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন ৪৫০ থেকে ৫০০ জন রোগী আসছেন চিকিৎসা সেবা নিতে।

হাসপাতালটিতে চিকিৎসক রয়েছেন ১৪ জন। ওষুধের কোনো স্বল্পতা নেই। জ্বর-সর্দিতে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে বিশেষ ডেস্ক রয়েছে।

যাদের করোনা কিংবা ডেঙ্গুর লক্ষণ রয়েছে তাদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে টেস্ট করানোর জন্য। হাসপাতাল থেকে বিনামূল্যে ডেঙ্গুর টেস্ট করা হয়। করোনা টেস্টের ফি সরকার নির্ধারিত বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ফরিদা নামের একজন জানান, গত দুই থেকে তিন ধরে তিনি জ্বর ও সর্দিতে ভুগছেন। তাই এসেছেন চিকিৎসক দেখিয়ে ওষুধ নেওয়ার জন্য।

রুনা নামের অপর একজন জানান, ১০ বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে এসেছেন। তার গত কয়েক দিন ধরে জ্বর-সর্দি।

চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের সঙ্গে কথা বলে অধিকাংশই জ্বর-সর্দির চিকিৎসা নিতে আসার তথ্য পাওয়া গেছে।

এদিকে গত সাত দিনে উপজেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাহিদ হাসান, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) একেএম লুৎফর রহমান ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সারোয়ার জাহানসহ বেশ কয়েকজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তারা বর্তমানে হোম আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এ পর্যন্ত উপজেলায় মোট ১৭৫ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১৬৪ জন। এছাড়া মারা গেছেন ৩ জন।

বর্তমানে এ উপজেলায় ৮জন আক্রান্ত রয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কোভিড ইউনিটে ভর্তি রয়েছেন। আক্রান্ত অন্যরা রয়েছেন হোম আইসোলেশনে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. মো. রেজাউল করিম কাওসার বলেন, ‘ঋতু পরিবর্তনের এই সময়ে জ্বর-সর্দির প্রকোপ কিছুটা বেড়ে থাকে। তবে যেহেতু করোনা কাল চলছে, সেহেতু বিশেষ উপসর্গ থাকা রোগীদের ক্ষেত্রে করোনা টেস্ট করা হচ্ছে।’

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শারমিন শাহনাজ জানান, ‘জ্বর-সর্দিতে আক্রান্তদের আলাদাভাবে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। ডেঙ্গু কিংবা করোনার লক্ষণ থাকা রোগীদের টেস্ট করানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’

যেহেতু করোনাকাল চলছে সেহেতু সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে ও মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার পরামর্শ দেন তিনি।

এছাড়া হাসপাতালটিতে পর্যাপ্ত ওষুধ ও করোনা পরীক্ষার কীট এবং বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষার সুযোগ রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

পাকুন্দিয়ায় বেড়েছে জ্বর-সর্দি ও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা

আপডেট টাইম : ০৬:০০:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ নভেম্বর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গত দুই-তিন দিন ধরে জ্বর-সর্দিতে ভুগছে আড়াই বছর বয়সী শাহ পরান। তাই তাকে চিকিৎসক দেখিয়ে ওষুধ নিতে এসেছেন মা দেলোয়ারা বেগম। একই অবস্থা রাব্বি নামের সাত বছরের এক শিশুর। সেও মায়ের সাথে এসেছে চিকিৎসার জন্য।

শাহ পরান, রাব্বির মতো অসংখ্য শিশু-নারী-পুরুষ জ্বর-সর্দিতে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসেছেন চিকিৎসার জন্য।

রোববার (২২ নভেম্বর) সকাল সোয়া ১০টার দিকে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, টিকিট কাউন্টারে শিশু-নারী-পুরুষের লম্বা লাইন। এর মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি। লম্বা লাইন দেখা গেছে চিকিৎসকর ও ওষুধ বিতরণের কক্ষের সামনেও।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গড়ে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ রোগী আসলেও গত এক সপ্তাহ ধরে বেড়েছে রোগীর সংখ্যা। গত এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন ৪৫০ থেকে ৫০০ জন রোগী আসছেন চিকিৎসা সেবা নিতে।

হাসপাতালটিতে চিকিৎসক রয়েছেন ১৪ জন। ওষুধের কোনো স্বল্পতা নেই। জ্বর-সর্দিতে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে বিশেষ ডেস্ক রয়েছে।

যাদের করোনা কিংবা ডেঙ্গুর লক্ষণ রয়েছে তাদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে টেস্ট করানোর জন্য। হাসপাতাল থেকে বিনামূল্যে ডেঙ্গুর টেস্ট করা হয়। করোনা টেস্টের ফি সরকার নির্ধারিত বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ফরিদা নামের একজন জানান, গত দুই থেকে তিন ধরে তিনি জ্বর ও সর্দিতে ভুগছেন। তাই এসেছেন চিকিৎসক দেখিয়ে ওষুধ নেওয়ার জন্য।

রুনা নামের অপর একজন জানান, ১০ বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে এসেছেন। তার গত কয়েক দিন ধরে জ্বর-সর্দি।

চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের সঙ্গে কথা বলে অধিকাংশই জ্বর-সর্দির চিকিৎসা নিতে আসার তথ্য পাওয়া গেছে।

এদিকে গত সাত দিনে উপজেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাহিদ হাসান, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) একেএম লুৎফর রহমান ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সারোয়ার জাহানসহ বেশ কয়েকজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তারা বর্তমানে হোম আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এ পর্যন্ত উপজেলায় মোট ১৭৫ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১৬৪ জন। এছাড়া মারা গেছেন ৩ জন।

বর্তমানে এ উপজেলায় ৮জন আক্রান্ত রয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কোভিড ইউনিটে ভর্তি রয়েছেন। আক্রান্ত অন্যরা রয়েছেন হোম আইসোলেশনে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. মো. রেজাউল করিম কাওসার বলেন, ‘ঋতু পরিবর্তনের এই সময়ে জ্বর-সর্দির প্রকোপ কিছুটা বেড়ে থাকে। তবে যেহেতু করোনা কাল চলছে, সেহেতু বিশেষ উপসর্গ থাকা রোগীদের ক্ষেত্রে করোনা টেস্ট করা হচ্ছে।’

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শারমিন শাহনাজ জানান, ‘জ্বর-সর্দিতে আক্রান্তদের আলাদাভাবে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। ডেঙ্গু কিংবা করোনার লক্ষণ থাকা রোগীদের টেস্ট করানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’

যেহেতু করোনাকাল চলছে সেহেতু সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে ও মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার পরামর্শ দেন তিনি।

এছাড়া হাসপাতালটিতে পর্যাপ্ত ওষুধ ও করোনা পরীক্ষার কীট এবং বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষার সুযোগ রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।